“অর্গানিক মধু, সোনালি ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি!”

ত্রিপুরার কৃষিক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা করলেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ। সোমবার উত্তর জেলার যুবরাজনগর কৃষি মহকুমার আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি ‘মধুবন’ নামে স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর উৎপাদিত অর্গানিক মধুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। কৃষকদের আর্থিক উন্নতি এবং আধুনিক কৃষি পদ্ধতির প্রসারই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জানান, সরকার কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতিতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার সবকিছু করতে পারলেও খাবার উৎপাদনের জন্য কৃষকদেরই এগিয়ে আসতে হবে। তাই কৃষকদের পরিশ্রম ও অবদানের প্রতি সম্মান জানানো অত্যন্ত জরুরি। কৃষকরাই মাঠ থেকে সোনা ফলান, তাদের উন্নতি হলে তবেই রাজ্যের সার্বিক অগ্রগতি সম্ভব। এদিন মধুবন গোষ্ঠীর উৎপাদিত মধুর উদ্বোধনের পাশাপাশি আগ্রহী কৃষকদের মধ্যে মধুর বাক্স বিতরণ করেন মন্ত্রী। তিনি জানান, মধু অত্যন্ত মূল্যবান একটি সামগ্রী, তাই অর্গানিক মধু চাষে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। শুধু রাজ্যের মধ্যেই নয়, ত্রিপুরার উৎপাদিত মধুকে দেশের অন্যান্য রাজ্যেও বিপণনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পাশাপাশি ধর্মনগর বাজারে মধুবন গোষ্ঠীর মধু বিক্রির জন্য একটি স্থায়ী স্টল প্রদানের বিষয়ে দপ্তর সহায়তা করবে বলে জানান তিনি। মধু চাষের পাশাপাশি আধুনিক চাষাবাদের প্রসারেও সরকারের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। মন্ত্রী এদিন এআরসি পদ্ধতিতে চাষ করা আলুর মাঠ দিবস কর্মসূচিতেও অংশ নেন। আগরতলার পার্শ্ববর্তী নাগিছরা এলাকার রাজ্যিক উদ্যান গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে রাজ্যের আটটি জেলায় এই আধুনিক পদ্ধতির চাষ শুরু হয়েছে, যার সুফল কৃষকরা ইতিমধ্যেই পাচ্ছেন। যুবরাজনগর কৃষি মহকুমাতেও এই পদ্ধতিতে আলু চাষ করা হয়েছে এবং সোমবার ছিল সেই আলুর ফসল সংগ্রহের বিশেষ দিন। মাঠে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী এবং তাদের সমস্যার কথা শোনেন। তিনি বলেন, উত্তর ত্রিপুরা জেলা এখনো উৎপাদনে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে, তবে কৃষকদের পরিশ্রম ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির সাহায্যে এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব। কৃষকদের উন্নতির জন্য সরকার সবরকম সহায়তা দিতে প্রস্তুত। অনুষ্ঠানে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা ড. ফনি ভূষণ জমাতিয়া, উদ্যান ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তরের অধিকর্তা দীপক দাস, ত্রিপুরা ফারমার্স ক্লাবের সভাপতি অসিত বরণ রায়, উত্তর ত্রিপুরা জেলা পরিষদের সভাধিপতি অপর্ণা নাথ সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে কৃষক ও স্থানীয় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো, যা প্রমাণ করে যে রাজ্যের কৃষিখাতে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য সকলেই আগ্রহী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *