গুপ্তের অন্ধকার কাশ্মীরে

২২ এপ্রিল ২০২৫, জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পাহেলগাঁওর বৈসরান অঞ্চলে ঘটে যায় এক নির্মম সন্ত্রাসী হামলা, যেখানে প্রাণ হারান অন্তত ২৮ জন এবং আহত হন বহু নিরীহ মানুষ। হামলাটি ছিল অত্যন্ত সংগঠিত ও পূর্বপরিকল্পিত, যার পিছনে দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF)। তদন্তে উঠে আসে এক পরিচিত কিন্তু বহুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকা নাম—সাইফুল্লাহ খালিদ। সাইফুল্লাহ, যার প্রকৃত নাম গুলাম নবি খান, এক সময় হিজবুল মুজাহিদিনের সক্রিয় সদস্য থাকলেও পরবর্তীতে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে পালিয়ে যায় এবং লস্কর-ই-তইবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হয়। সেখান থেকেই সে TRF-এর জন্ম দেয় এবং কাশ্মীরের মাটিতে একের পর এক জঙ্গি কার্যক্রম চালাতে থাকে। শুধু পরিকল্পনা নয়, অর্থ জোগান, প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহেও সাইফুল্লাহর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের দাবি। পাহেলগাঁও হামলায় তার সক্রিয় মদদ ও নির্দেশে চালানো হয় এই হত্যালীলা। তাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে এক রহস্যময় ছায়াচরিত্র, যার রাজনৈতিক পরিচয়ও রয়েছে পাকিস্তানে। সেখানকার একটি অঘোষিত রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা হিসেবে সে প্রকাশ্যে গণমাধ্যমে এসেছে, কিন্তু ভারতের মাটিতে সে এক রক্তাক্ত অধ্যায়ের মূল কারিগর। এই ঘটনার পর থেকেই নিরাপত্তা বাহিনী তাকে খুঁজে বের করতে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে। সাইফুল্লাহর মতো জঙ্গি নেতারা কাশ্মীর উপত্যকার শান্তি ও স্থিতিশীলতার অন্যতম বড় হুমকি, যাদের নির্মূল না করা পর্যন্ত এই অশান্তির সমাপ্তি দূরপরাহত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *