“প্রেম, প্রতারণা ও বিষপান—কে দেবে ন্যায়বিচার?”

প্রেম প্রতারণা

সোশ্যাল মিডিয়ার প্রেম থেকে বিয়ে, আর সেখান থেকে প্রতারণার অভিযোগ—শেষ পর্যন্ত বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা এক যুবকের! এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে ত্রিপুরার ধর্মনগর শহরে।

আগরতলার রাধানগরের বাসিন্দা বিদুৎ দাসের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগরের দেওয়ানপাশা গ্রামের বাসিন্দা এবং মহিলা পুলিশ কনস্টেবল চিন্ময়ী সরকারের। দু’জনের কথোপকথন দ্রুত প্রেমে রূপ নেয়। একে অপরকে ভালোবেসে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয় এবং চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি বিয়ের দিন স্থির হয়। কিন্তু বিয়ের মাত্র ২৫ দিন আগে চিন্ময়ী বিয়েতে অনীহা প্রকাশ করেন এবং বিদুৎকে জানিয়ে দেন যে তিনি আর এই সম্পর্ক রাখতে চান না।

এই আকস্মিক সিদ্ধান্তে বিদুৎ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। অভিযোগ, চিন্ময়ী শুধু বিয়ে ভেঙেই ক্ষান্ত হননি, বরং ফেসবুকে বিদুৎকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। হতাশাগ্রস্ত বিদুৎ আগরতলার পশ্চিম থানায় প্রেমিকা চিন্ময়ী ও আরও এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তবে তার দাবি, পুলিশ কোনো সুবিচার দেয়নি।

বিদুৎ আরও জানান, চিন্ময়ীর সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা ফেসবুকে প্রকাশ করার পর, চিন্ময়ী সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ জানান। ফোন করেও তাকে কটূক্তি করেন এবং সম্পর্ক ঠিক করার চেষ্টা করলে ধর্মনগর মহিলা থানার ওসির কাছেও বারবার গিয়েও কোনো সমাধান পাননি।

শেষ পর্যন্ত, প্রেমে প্রতারিত হয়ে বিদুৎ ট্রেনে চেপে ধর্মনগরে আসেন। শহরের দিঘির পাড় এলাকায় চিন্ময়ীর উদ্দেশে একটি চিরকুট লিখে বিষপান করেন তিনি। স্থানীয় লোকজন ঘটনা প্রত্যক্ষ করে দ্রুত বিদুৎকে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় তার প্রাণ রক্ষা পায় এবং বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বিদুৎ ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন। তার বক্তব্য, প্রেমে প্রতারিত হয়ে তিনি চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন এবং প্রশাসনের উচিত তার অভিযোগের সঠিক তদন্ত করা।

এই ঘটনার পর থেকে ধর্মনগর জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার প্রেম থেকে এমন করুণ পরিণতি আজকের তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি বড় শিক্ষা হয়ে রইল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *