আজ, ২৯ মার্চ ২০২৫, ত্রিপুরা সহ সমগ্র ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্যোতির্বিজ্ঞানিক ও জ্যোতিষশাস্ত্রীয় ঘটনা ঘটছে—সূর্যগ্রহণ। এই গ্রহণটি দুপুর ২:২০ মিনিটে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬:১৬ মিনিটে শেষ হবে, যদিও এটি ভারতে দৃশ্যমান নয়। তবে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য এটি এক মহামূল্যবান পর্যবেক্ষণ, কারণ সূর্য, চন্দ্র ও পৃথিবীর সুনির্দিষ্ট অবস্থান নিয়ে এই ঘটনা সংঘটিত হয়। গ্রহণের সময় সূর্যের আলো কিছুক্ষণের জন্য ক্ষীণ হয়ে পড়ে, যা বিজ্ঞানের ভাষায় একটি মহাজাগতিক সংযোগের প্রতিফলন।
হিন্দু পুরাণ অনুসারে, সূর্যগ্রহণ একটি গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক ও জ্যোতিষশাস্ত্রীয় ঘটনা। পুরাণে রাহু ও কেতুর কাহিনি গ্রহণের মূল ব্যাখ্যা প্রদান করে, যেখানে বলা হয়, সমুদ্রমন্থনের সময় দেবগণ ও অসুরদের মধ্যে কৌশলে অমৃত গ্রহণ করায় রাহুর শিরশ্ছেদ করেন মহাদেব। সেই শিরচ্ছেদের ফলেই রাহু ও কেতু আলাদা দুটি গ্রহ হয়ে ওঠে এবং সূর্য ও চন্দ্রকে মাঝে মাঝে গ্রাস করে। হিন্দু শাস্ত্রে সূর্যগ্রহণকে অশুভ সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেখানে গর্ভবতী নারীদের সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়, মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে এবং গ্রহণ পরবর্তী স্নান ও দান করাকে শুভ হিসেবে গণ্য করা হয়।আজকের এই গ্রহণ আরও তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি শনির রাশি পরিবর্তনের সঙ্গেও মিলিত হয়েছে। জ্যোতিষ মতে, এই দিনে শনি কুম্ভ থেকে মীন রাশিতে প্রবেশ করছে, যা কিছু রাশির জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে, আবার কিছু রাশির জন্য সতর্কবার্তা বহন করে আনতে পারে। সিংহ, তুলা এবং মীন রাশির জাতকদের জন্য এটি ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেখানে মেষ, কর্কট, বৃশ্চিক ও ধনু রাশির জন্য এটি কিছু চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসতে পারে। তবে, জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, গ্রহণের সময় ধ্যান, জপ ও পূজা বিশেষ ফলদায়ী হয় এবং নেতিবাচক শক্তি দূর করে শুভফল বয়ে আনতে পারে।
অতএব, আজকের সূর্যগ্রহণ শুধুমাত্র একটি মহাজাগতিক ঘটনা নয়, এটি আধ্যাত্মিক, জ্যোতিষীয় এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এক গভীর তাৎপর্যময় মুহূর্ত। গ্রহণের ছায়ায় আমাদের জীবনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হোক—এই শুভকামনাই রইল!