
ত্রিপুরার উত্তর জেলার চুরাইবাড়ি থানাধীন গোবিন্দপুর এলাকার এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকলো গোটা রাজ্য। পণের চাপ ও গার্হস্থ্য নির্যাতনের শিকার হয়ে অন্তঃসত্তা তরুণী গৃহবধূ মনিকা শুক্লবৈদ্য আত্মঘাতী হলেন।২০২৩ সালে সামাজিক রীতিতে কৈলাসহরের ভাগ্যপুর গ্রামের ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত শঙ্কু শুক্লবৈদ্যের সঙ্গে মনিকার বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের মাত্র তিন মাসের মধ্যেই মনিকার উপর নেমে আসে অত্যাচারের কালো ছায়া। শ্বশুর-শাশুড়ির সহায়তায় স্বামী পণের দাবিতে দুই লক্ষ টাকা আনার জন্য লাগাতার চাপ দিতে থাকে।মনিকা সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নির্যাতন সইতে না পেরে বাপের বাড়ি ফিরে আসেন। সন্তান জন্মের পর শালিশির মাধ্যমে ফের স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হলেও অত্যাচার কমেনি। উপরন্তু স্বামীর একাধিক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের প্রমাণও পান মনিকা। প্রতিবাদ করলে মারধরের শিকার হন।শেষবার চলতি এপ্রিলের ১৮ তারিখ ফের স্বামী শঙ্কু ও অপর এক ব্যক্তি এসে মনিকাকে নির্মমভাবে মারধর করে। সেই ভিডিও ধারণ করেন মনিকা। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে সেদিনই সন্ধ্যায় বাড়ি ছেড়ে চলে যান এবং চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।রেল পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে পাঠায়। বর্তমানে মৃত মনিকার কোলে রয়েছে মাত্র দুই বছরের ফুটফুটে সন্তান। গৃহবধূর মা মিরা শুক্লবৈদ্য চুরাইবাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ আইপিসির ৮৫/৮০/৩(৫) ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।প্রশ্ন উঠছে, এই নির্মম ঘটনার পর অবুঝ শিশুর ভবিষ্যৎ কি আদৌ ন্যায়বিচার পাবে?