সোনার দাম পড়ছে শুনে গয়নার দোকানদার কাঁদছে

একদিন ছিল যখন সোনা মানেই ছিল নিরাপত্তা, সঞ্চয় আর গৌরবের প্রতীক। কিন্তু ২০২৫ সাল যেন অন্য সুর গাইছে। বিশ্ব অর্থনীতির পালাবদলে সোনার ঝলক কমে আসছে ধীরে ধীরে। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, চলতি বছরে সোনার দামে উল্লেখযোগ্য পতনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, এবং এর পেছনে কারণগুলিও বেশ জোরালো।বিশ্ববাজারে পণ্যদ্রব্যের দাম পড়ে যাওয়ায় স্বর্ণের বাজারে চাপ বেড়েছে। ডলারের শক্তিশালী অবস্থান এবং মার্কিন অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো বিনিয়োগকারীদের আরও ঝুঁকিপূর্ণ, উচ্চ রিটার্নের সম্পদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একসময়ের সোনার প্রতি নির্ভরতা আজ শেয়ার ও বন্ডের কাছে হার মানছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনার আগ্রহেও এসেছে ভাটা, বিশেষ করে চীন ও রাশিয়ার মত দেশগুলো ধীরে ধীরে তাদের ভাণ্ডার বন্ধ করে দিচ্ছে।ভারতের ক্ষেত্রেও গল্পটা আলাদা নয়। সোনার দাম এখন রেকর্ড উচ্চতায়, ফলে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। উৎসব বা বিবাহের মরসুমেও দেখা যাচ্ছে, চাহিদা কমে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। বিশ্ব স্বর্ণ পরিষদের তথ্যানুসারে, ২০২৫ সালে ভারতের সোনার চাহিদা নেমে যেতে পারে ৭০০ থেকে ৮০০ টনের মধ্যে, যেখানে ২০২৪ সালে তা ছিল প্রায় ৮০৩ টন।এই পতন শুধু সংখ্যার খেলা নয়, এটা আবেগেরও পতন। সেই সোনালি বিশ্বাস, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে গেঁথে গিয়েছিল ভারতীয় পরিবারগুলোর মনে, এখন অর্থনীতির কাঁধে টলে যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের কাছে এটি একটি সতর্কবার্তা—সব সময় সোনা মানেই লাভ, এমন ধারণা এবার ভাঙতে শুরু করেছে।তবে এটা একেবারে হতাশার চিত্র নয়। বাজারের নিয়মই হচ্ছে উঠানামা। সোনার মূল্য হয়তো নামছে, কিন্তু তাতে এর গুরুত্ব একেবারে হারিয়ে যায়নি। যারা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগে বিশ্বাস করেন, তাদের জন্য এ হতে পারে একটি সুযোগ—সঠিক সময়ে, সঠিক দামে বাজারে ঢোকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *