হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকেই হারালেন ৪২ লাখ

হায়দরাবাদের এক আইটি পেশাজীবী সম্প্রতি সাইবার প্রতারণার ফাঁদে পড়ে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। প্রতারকেরা তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে শুধু ব্যক্তিগত যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটায়নি, বরং তাঁকে ব্ল্যাকমেইল করে বিশাল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। হ্যাক হওয়ার পরপরই ওই টেকি লক্ষ্য করেন, তিনি হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকতে পারছেন না। এরপর থেকেই তাঁর পরিচিতদের কাছে বিভিন্ন মেসেজ যেতে থাকে যেখানে বলা হয়, তিনি বিপদে পড়েছেন এবং জরুরি সাহায্যের প্রয়োজন। অনেকেই তাঁকে বিশ্বাস করে প্রতারকের দেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠান।

পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন হ্যাকার সরাসরি টেকির সঙ্গে যোগাযোগ করে। সে জানায়, তাঁর ব্যক্তিগত ছবি ও গোপন তথ্য হ্যাকারদের হাতে রয়েছে এবং তা অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়া হবে যদি তিনি ৩ বিটকয়েন না পাঠান। সেই সময়ে এক বিটকয়েনের মূল্য প্রায় ১৪ লাখ টাকা, অর্থাৎ মোট ৪২ লাখ টাকার দাবি করে হ্যাকার। পরিবারের মান-ইজ্জত, পেশাগত জীবনের সুরক্ষা এবং নিজের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে ওই ব্যক্তি নিরুপায় হয়ে দাবিকৃত পুরো অর্থ প্রতারকের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন।

কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, টাকা পাঠানোর পরেও হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ফিরে পাননি তিনি। বরং হ্যাকার আরও কিছুদিন পর পুনরায় ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে। তখন তিনি বুঝতে পারেন, এটি নিছক হ্যাকিং নয়, বরং একটি পরিকল্পিত সাইবার অপরাধ। অবশেষে তিনি সাইবার অপরাধ দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, এটি একটি সুসংগঠিত আন্তর্জাতিক সাইবার চক্রের কাজ, যারা ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়ে সাধারণ মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে বিপুল অর্থ আদায় করছে।

এই ঘটনাটি আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার সময় সচেতনতা কতটা জরুরি। শুধু হোয়াটসঅ্যাপ নয়, যেকোনো অ্যাপ বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সময় দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সক্রিয় রাখা, অপরিচিত লিংকে ক্লিক না করা এবং ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখা আজকের দিনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করেছে ঠিকই, কিন্তু একটুখানি অসতর্কতা সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে—এই ঘটনার পর তা আর অস্বীকার করার উপায় নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *