“ব্যাংক কর্মীদের ন্যায্য অধিকার চাই, বঞ্চনা আর নয়!” – এই দাবি তুলে দেশজুড়ে আন্দোলনে নামতে চলেছে United Forum of Bank Unions (UFBU), ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি। আগামী ২৪ ও ২৫ মার্চ দেশব্যাপী ব্যাংক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ইউনিয়ন, যার ফলে দুই দিনব্যাপী ব্যাঙ্ক পরিষেবা প্রায় স্তব্ধ হয়ে পড়তে পারে।ব্যাংক কর্মীদের অভিযোগ, দিনের পর দিন কর্মীসংখ্যা কমছে, কাজের চাপ বাড়ছে, অথচ নতুন নিয়োগ করা হচ্ছে না। সরকারি নীতি অনুযায়ী ব্যাংকিং খাতে আরও সুযোগ তৈরি হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তার উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে। ২০১৩ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে ব্যাংকে কর্মরত ক্লার্ক ও সাব-স্টাফদের সংখ্যা লক্ষাধিক কমে গেছে, বিশেষ করে সরকারি ব্যাংকগুলিতে ব্যাপক হারে নিয়োগ সংকোচন হয়েছে। ব্যাংকিং পরিষেবায় আউটসোর্সিং ক্রমাগত বাড়ানো হচ্ছে, যার ফলে স্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ কমছে। ইউনিয়নের দাবি, এই প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করা হোক এবং সমস্ত শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ করা হোক।এছাড়াও, ব্যাংক কর্মীদের জন্য সপ্তাহে পাঁচ দিনের কাজ চালুর দাবি উঠেছে। কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, কারণ সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিং সেক্টরে চাপে পড়ে কর্মীদের আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ব্যাংক কর্মীদের জন্য ₹২৫ লাখ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থার দাবিও জানানো হয়েছে। কিন্তু সরকারের তরফ থেকে কোনো সদর্থক পদক্ষেপ না আসায় এবার বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটছে ইউনিয়ন।UFBU স্পষ্ট করেছে, এই আন্দোলন শুধু ব্যাংক কর্মীদের স্বার্থের জন্য নয়, গ্রাহকদেরও প্রভাবিত করবে। কর্মী সংকটের কারণে গ্রাহক পরিষেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও মানুষ প্রয়োজনীয় পরিষেবা পাচ্ছেন না। ব্যাংক ইউনিয়নের দাবি, যদি সরকার ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে সঠিক পথে চালিত করতে চায়, তবে কর্মী সংকোচন বন্ধ করতেই হবে।এই ধর্মঘটের কারণে সাধারণ মানুষকে সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে, বিশেষ করে যাঁরা নগদ লেনদেনের জন্য ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল। তবে ইউনিয়নের বক্তব্য, এই লড়াই দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনের জন্য, যাতে ভবিষ্যতে গ্রাহক ও কর্মী উভয়েই উপকৃত হন। এখন দেখার, সরকারের তরফ থেকে কোনও সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয় কি না, নাকি দেশবাসীকে এই দু’দিন ব্যাংক ধর্মঘটের প্রভাব মেনে নিতে হবে!
২৪-২৫ মার্চ ব্যাংক ধর্মঘট, স্তব্ধ হতে পারে ব্যাংক পরিষেবা
