
ত্রিপুরার পর্যটন শিল্পে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হতে চলেছে। পর্যটনকে রাজ্যের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ一রূপে গড়ে তুলতে এবং ত্রিপুরাকে দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে রাজ্য সরকার একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি, ৩রা মার্চ ২০২৫, মাননীয় কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত ত্রিপুরা সফরে আসেন এবং রাজ্যের পর্যটন উন্নয়ন পরিকল্পনা পর্যালোচনা করেন। ত্রিপুরার পর্যটনমন্ত্রী শ্রী সুশান্ত চৌধুরী এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ঘোষণা করেন, যা রাজ্যের পর্যটন শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করবে।পর্যটনমন্ত্রী শ্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, “ত্রিপুরার পর্যটনের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে আমরা রাজ্যকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে রাজ্য সরকার নিরলস পরিশ্রম করে চলেছে। পর্যটন শুধু রাজস্ব বৃদ্ধির মাধ্যম নয়, এটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে এবং রাজ্যের অর্থনৈতিক বিকাশকে ত্বরান্বিত করবে।” এই লক্ষ্যে ত্রিপুরা হেরিটেজ ভিলেজ ও সংগীত অভিজ্ঞতা প্রকল্পের জন্য ₹৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ও সংস্কৃতিকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। পাশাপাশি, আগরতলায় মিস্টিক প্ল্যান্টেশন রিট্রিট প্রকল্পের জন্য ₹৩০ কোটি টাকা অনুমোদিত হয়েছে, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে কেন্দ্র করে পর্যটন বিকাশের দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। জম্পুই হিলকে পর্যটনের এক নতুন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে জম্পুই রিট্রিট ও হাইটস প্রকল্পের জন্য ₹৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।এছাড়াও, কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত রাজ্যের পর্যটন উন্নয়নে আরও বড় পদক্ষেপ হিসেবে স্বদেশ দর্শন ২.০ প্রকল্পের জন্য ₹১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর ফলে ত্রিপুরার পর্যটন পরিকাঠামো আরও উন্নত হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। শুধু তাই নয়, রাজ্যের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য ৮টি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের উন্নয়ন পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। এ ছাড়াও, একটি নির্দিষ্ট স্থানে ASI (Archaeological Survey of India) অফিস স্থাপনের প্রস্তাব কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, যা রাজ্যের প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদের সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।ত্রিপুরার পর্যটনমন্ত্রী শ্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, “ত্রিপুরাকে আমরা শুধুমাত্র একটি পর্যটন গন্তব্য হিসেবে নয়, বরং এক অভিজ্ঞতার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, প্রকৃতি এবং আধুনিকতার সমন্বয়ে ত্রিপুরাকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা হবে।” এই উদ্যোগগুলির মাধ্যমে ত্রিপুরা পর্যটনের মানচিত্রে নতুন করে জায়গা করে নেবে এবং স্থানীয় অর্থনীতির বিকাশ ঘটবে। আজকের এই প্রচেষ্টা আগামী দিনে ত্রিপুরাকে পর্যটনের অন্যতম স্বপ্নের গন্তব্য হিসেবে গড়ে তুলবে। “ত্রিপুরা – ঐতিহ্যের সুর, প্রকৃতির ছোঁয়া” এই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর।