ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (IMD) সম্প্রতি জানিয়েছে, ২০২৫ সালের বর্ষা মৌসুমে দেশজুড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই ঘোষণা ত্রিপুরার মতো কৃষিনির্ভর উত্তর-পূর্ব রাজ্যের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষা মৌসুম ত্রিপুরার কৃষিজ অর্থনীতির মেরুদণ্ড। এই সময়ে পাট, ধান, তিলসহ বহু মৌসুমি ফসলের আবাদ নির্ভর করে নিয়মিত ও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের উপর। এমন অবস্থায় IMD-এর এই পূর্বাভাস রাজ্যের কৃষকদের মনে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।ত্রিপুরা পূর্বতন অভিজ্ঞতায় দেখেছে, যখন বর্ষা সময়মতো আসে এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়, তখন রাজ্যের কৃষি উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ে। ২০২৩ সালে প্রাকৃতিক বৃষ্টিপাতে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় অনেক কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন। তাই ২০২৫ সালে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বর্ষণের সম্ভাবনা এ অঞ্চলে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষক পরিবারের আয় বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। একইসঙ্গে খাদ্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করবে।তবে আশার পাশাপাশি কিছু সতর্কতার বিষয়ও সামনে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু অংশে তুলনামূলক কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে। ত্রিপুরা পাহাড়ি ও নদীঘেরা রাজ্য হওয়ায় অতিবৃষ্টি বা হঠাৎ বন্যার ঝুঁকিও থাকে। তাই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা গ্রহণ, নদী বাঁধ মজবুতকরণ এবং জলাভূমি সংরক্ষণের দিকে নজর দেওয়া জরুরি। একইসঙ্গে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, জল সংরক্ষণ ও আধুনিক সেচ ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেওয়া দরকার।মোটের উপর, ২০২৫ সালের বর্ষা মৌসুম ত্রিপুরার জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে। রাজ্য প্রশাসন ও কৃষকদের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে এই সম্ভাবনাকে বাস্তব রূপ দেওয়াই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে ত্রিপুরা রাজ্যের কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটাতে পারে এই বর্ষা।
আশার বৃষ্টি: ২০২৫-এ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বর্ষার পূর্বাভাস
